অ্যাপসপ্রযুক্তি

এবার বৃহত্তম কৃত্রিম সূর্য বানাতে চাচ্ছি জার্মানি

সূর্য হল পৃথিবীর প্রধান শক্তির উৎস।এই সূর্যের আলোর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম আমাদের জীবনে। সূর্যের আলো সঠিকভাবে পৃথিবীতে না পৌছালে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে দৈনন্দিন জীবন। যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যলোক না থাকলে কিভাবে চলবে সোলার প্যানেল বা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ? 

এবার বৃহত্তম কৃত্রিম সূর্য বানাতে চাচ্ছি জার্মানি

যেহেতু সোলার প্যানেলের আলোটি আসে সরাসরি সূর্য হতেই। সে কারণে পৃথিবীর যেসব দেশের সূর্যের আলো ঠিকভাবে পৌঁছয় না সেসব দেশকে রীতিমতো বিপদে পড়তে হয়। আর এদিকে এই সূর্যের আলো সঠিক ভাবে পায় না জার্মানির অধিকাংশ অঞ্চলই।এই সমস্যার সমাধানেই পুরো বিশ্বের মধ্যে সব থেকে বড় আকারের কৃত্রিম সূর্য নির্মাণ করল জার্মান। 

তারা রীতিমতো ‘বৈজ্ঞানিক বিপ্লব’ ঘটিয়ে ফেলছে। এটি করেছেন ‘জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার’-এর বিজ্ঞানীরা। হাইড্রোজেন সংশ্লেষণ করে জ্বালানিতে সহায়তা করবে কৃত্রিম সূর্য টি বিজ্ঞানীদের ধারণা। কোলোন শহর হতে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জুয়েলিখ। এই জুয়েলিখে  সেই আলো জ্বালানোর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

আর ১৪৯ টির জেনন বাতি দিয়ে তৈরি হয়েছে এই কৃত্রিম সূর্য টি। এই জেনন বাতিগুলোকে  সিনেমার প্রজেক্টর এর মত শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। সূর্য প্রতিদিন পৃথিবীতে যে পরিমাণ আলো ছড়ায় সে আলো হতেও 10 হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী হলো এই কৃত্রিম সূর্য। 

বিজ্ঞানীদের ধারণা এই যন্ত্রটি ২০-২০ সেন্টিমিটার স্থানের মধ্যে সৌরশক্তি কে ধারণ করতে পারবে এই সিন লাইট বা সূর্য লোক। যন্ত্রটি দেখতে প্রায় বিরাট বড় গোল মৌচাকের অনুরূপ।

 এটি মূলত উচ্চ তাপমাত্রা উৎপাদন করতে এবং হাইড্রোজেন সংগ্রহ করার নতুন উপায় খুঁজতে সহায়তা করবে। এটি ব্যবহারের ফলে যখন জ্বালানিকে পোড়ানো হবে তখন এর কারণে কোন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ হবে না।

তবে এই যন্ত্রটি চালিয়ে তাপ উৎপাদনের জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন পড়বে। জার্মানির ইন্সটিটিউট অব সোলার রিসার্চ এর প্রধান ড. কাই উইগহার্ট, তিনি বিজ্ঞানীদের দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি জানান তারা এই কৃত্রিম সূর্য দ্ধারা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আলো পাবে। পশ্চিম জার্মানির মতো জায়গায় যেটি খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ এখানে প্রতিদিন সূর্যের  আলো পাওয়া যায় না এবং আবহাওয়া তেমন একটা ভালো নয়।

আরো পড়ুন… এবার বেলুনে চড়ে যাওয়া যাবে মহাকাশে উদ্দেশ্যে

জার্মান এরোস্পেস সেন্টার ডিএলআর সম্প্রতি যন্ত্রটি পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষা করে তারা জানান, হাইড্রোজেন সংগ্রহ করার অন্যতম  উপায় হলো পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করা এবং  এ থেকে উৎপন্ন হয় অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেন। এবং এতে অনেক তড়িৎ শক্তির প্রয়োজন পড়ে। আর জার্মানির তৈরি এই সিন লাইট এতটাই বিশাল আকৃতির যে এটা চালিয়ে তাপ উৎপাদনেও প্রচুর পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়।

এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন যাতে এই কৃত্রিম সূর্য টিতে প্রকৃত সূর্যালোক ব্যবহার করে হাইড্রোজেন সংশ্লেষণ করা যায়। তাদের ধারণা তারা এমন জ্বালানি উৎপাদন করবেন যেটি বিমান শিল্পে ব্যবহৃত হবে। এবং এই জ্বালানিটি তৈরি হবে হাইড্রোজেন এবং কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস দিয়ে। 

এটার মাধ্যমের বিজ্ঞানীরা আগামী দিনের সোলার বা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেন। খবরটি বিবিসি বাংলার। এই কৃত্রিম সূর্য টির আবিষ্কার বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় নতুন একটি দিগন্ত তৈরি করবে।

30

Related Articles

Back to top button