অ্যাপসইন্টারনেট

কৃষকের সমস্যা সমাধানে চালু হলো ‘ফুড ফর ন্যাশন’ প্ল্যাটফর্ম

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক উদ্বোধন করেছেন ‘ফুড ফর ন্যাশন (foodfornation.gov.bd)’ প্ল্যাটফর্মটি।এটি হলো বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত কৃষি মার্কেট প্লেস। এটি করার মূল উদ্দেশ্য হলো খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের সঠিকভাবে বিপণন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা ,চাহিদা অনুযায়ী সহজলভ্যতা তৈরি এবং সেইসাথে অনেক জরুরি অবস্থায় যাতে খাদ্য সরবরাহের চেইনটি অব্যাহত থাকে।

কৃষকের সমস্যা সমাধানে চালু হলো ‘ফুড ফর ন্যাশন’ প্ল্যাটফর্ম

তিনি জানিয়েছেন‌ বর্তমানে দেশে খাদ্য ও কৃষি পণ্য ব্যবস্থাপনায় যে নতুন চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা হতে নিষ্পত্তি পেতে সহায়তা করবে এই ‘ফুড ফর ন্যাশন’ প্ল্যাটফর্মটি।

গতবছরের ২৩ শে মে শনিবার এই ‘ফুড ফর ন্যাশন’ প্ল্যাটফর্মটির উদ্বোধন হয়।কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভার্চ্যুয়াল ভাবে(জুম প্ল্যাটফর্মে) আয়োজিত হয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি।আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আয়োজিত অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ।

অনুষ্ঠানটি প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এই মহামারী করোনার জন্য শাকসবজি, মৌসুমি ফলসহ কৃষিপণ্যের স্বাভাবিক পরিবহন এবং সঠিক বিপণনে ব্যাঘাত‌ ঘটছে।কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সমূহ সঠিকভাবে সঠিক সময়ে বিক্রয় করতে পারছেন না। সেইসাথে তারা অনেক সময়ই তাদের ন্যায্য মূল্যটি পাচ্ছে না। বর্তমান সময়ে এই কৃষিপণ্য সমূহ বাজারজাত করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা যাতে তাদের ন্যায্য মূল্য পেতে পারে এবং সেইসঙ্গে ক্রেতারাও তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য এবং কৃষি পণ্য পেতে পারে সে সেজন্যই ‘ফুড ফর নেশন’ শুরু করা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যশস্য ও কৃষি পণ্য গুলো উৎপাদিত হলেও কৃষকরা তাদের ন্যায্য মূল্য অনেকাংশেই পাচ্ছে না। ক্রেতা গণ ও তাদের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক মূল্যে সব সময় খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্য পাচ্ছে না। এই সমস্যার মূলে রয়েছে – তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য কৃষকসহ সাধারণ জনগণের সঠিক জ্ঞান ও উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মের অভাব, পরিবহণ ব্যবস্থায় দৌরাত্ম্য, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিণ্ডিকেট, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সার্বিকভাবে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব।

এই সমস্যা হতে উত্তোরনের জন্যই বাংলাদেশ এ প্রথমবার এর মত চালু হয়েছে ফুড ফর ন্যাশন’ উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মটি। এ তথ্য জানিয়েছে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

‘ফুড ফর ন্যাশন’ বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত একটি কৃষিপণ্য প্লাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্ম দ্বারা ‘একশপ’ এর সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা নেটওয়ার্কের সাহায্যে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে বাজারজাতকারী, আড়ৎদার, বিপণনকারী আর প্রাতিষ্ঠানিক ভোক্তা পুরো দেশব্যাপী পণ্যের মূল্য এবং সেইসাথে পণ্যটির মান ও গুনাগুন যাচাই করে ক্রয় করতে পারবে।

‘ফুড ফর ন্যাশন’ এই প্ল্যাটফর্মটিতে ক্রেতা-বিক্রেতারা রেজিস্ট্রেশন করে কৃষি জাতীয় সব ধরনের খাদ্য শস্য, ভোগ্য ফসল ,সবজির ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে বিজ্ঞাপন দিতেও পারবে এবং কিনতেও পারবে।

সেইসঙ্গে স্টার্টআপ বাংলাদেশের দ্ধারা সংযুক্ত সব ধরনের ক্রেতারা বিক্রেতাদের প্রোফাইলে দেয়া ফোন নম্বরের সাহায্যে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শাকসবজি থেকে শুরু করে সকল ধরনের কৃষি পণ্য কিনতে পারবে। প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী কেনার পর তার মূল্য পরিশোধের জন্য ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ই আলোচনার মাধ্যমে সুবিধামতো মাধ্যম নির্বাচন করে লেনদেন করতে পারবে।

পরিবহনের ক্ষেত্রে ক্রেতা চাইলেই একশপ ফুলফিলমেন্ট সেবাটি গ্ৰহণ করতে পারবেন। অথবা ক্রেতা-বিক্রেতা নিজে দরদাম করে ও ব্যবস্থা নিতে পারবেন।মার্কেটপ্লেসটি হল সম্পূর্ণ একটি ফ্রি প্লাটফর্ম। কোন খরচ ছাড়াই অর্থাৎ বিনামূল্যে ক্রয়- বিক্রয় , বিজ্ঞাপন দিতে পারবে ।

এই ‘ফুড ফর ন্যাশন’ প্ল্যাটফর্মটিতে কৃষি ব্যবসায়ীদের ডেটাবেইস, ফসল ও কৃষিপণ্যের দৈনিক বাজার দর এবং সহযোগিতার জন্য কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ নম্বর দেয়া থাকবে।

আরো পড়ুন… এবার চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছে কোন নারী

এই প্লাটফর্মটি নির্মাণে কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এটুআই ও উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প এবং কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

এই অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন এন এম জিয়াউল আলম পিএএ।তিনি হলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, আইডিইএ প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ডাক বিভাগ, বিআরটিসি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, এটুআই, আইডিইএ প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা ।

30

Related Articles

Back to top button