এবার আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করে আছেন। আর এর কারণ হলো বিবিসির বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথান এমোস আরো বলেন যে নাসার মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্স এর আজ গ্রিনিচ মান সময় রাত ৯ টায় মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়াও ছয় চাকার এই স্বয়ংচালিত যানটি পৃথিবী থেকে ৪৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার (৪৭ কোটি মাইল) পথের যাত্রা শুরু করে দিয়েছিল প্রায় সাত মাস আগে। বিশেষ করে এই মহাকাশ মিশনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ হল মঙ্গলের পৃষ্ঠে সফলভাবে যানটির অবতরণের মুহূর্তটি। আর যানটিকে নিরাপদে লাল গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করাতে হবে। এর কারণ হলো এই যে আগে বহু মহাকাশযান এই কাজ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত পড়েছিল।
এছাড়াও পারসিভেয়ারেন্স যদি সফল হওয়া যায় তাহলে আমরা জানতে পারব যে মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা। আর এটি জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তারা আশাবাদী।
বিশেষ করে আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি বলেও তারা জানান। আর এই সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে টার্গেট করে কোন রোবটও এর আগে কখনও নামানো হয়নি বলেও তারা জানান।
বিশেষ করে যেখানে এই মহাকাশ রোবটের মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করার কথা ছিল সেই স্থানটি হল জেযেরো ক্রেটার। আর একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ থাকার লক্ষণ উপগ্রহে পাওয়া ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন বলেও জানান। এছাড়াও তাদের ধারণা এই হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল বলে তারা মনে করেন।
এছাড়াও আমরা জানি যে পারসিভেয়ারেন্স অবতরণের গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি হল মঙ্গলের পরিমণ্ডলের সাথে যোগাযোগ : ২০:৪৮ জিএমটি
এছাড়াও অবতরণের ক্ষেত্রে প্যারাশুট খুলে যাওয়া : ২০:৫২ জিএমটি
এছাড়াও বিশেষ করে শক্তি ব্যবহার করে অবতরণ শুরু : ২০:৫৪ জিএমটি
আর চাকা খুলে যাওয়া : ২০:৫৫ জিএমটি
এছাড়াও বিশেষ করে পারসিভেয়ারেন্স যেখানে নামতে হবে সেই জেযেরো গহ্বরের ধুলাবালুর মধ্যে থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে রোবটি। আর বিশ্লেষণ করে দেখা হবে যে গ্রহটিতে অতীতে জৈব কোনো কর্মকাণ্ডের হদিস আছে কিনা, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা। আর এর পাশাপাশি সবচেয়ে লক্ষণযুক্ত ও সম্ভাবনাময় নমুনা গুলো পৃথিবীতে পাঠানো হবে বিশেষ করে ভবিষ্যত মিশনের প্রস্তুতির জন্য।
তবে মঙ্গলপৃষ্ঠে ভবিষ্যতের মিশনে পাঠানোর আগে আমাদের অবশ্যই আগে মঙ্গলে ঠিকমত অবতরণ করতে হবে। এছাড়াও সেটাই সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ,” বলে মনে করেন নাসায় পারসিভেয়ারেন্সের উপ-প্রকল্প ম্যানেজার ম্যাট ওয়ালেস।
আরো পড়ুন… এবার মঙ্গল গ্রহ থেকে এলো প্রথম ছবি
এছাড়াও মহাকাশ মিশনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম হলো সফল অবতরণ করা, আরে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়া মঙ্গলগ্রহে এর আগে যেসব মিশন পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ যান মঙ্গলের পিঠে সফলভাবে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল বলে জানান নাসা বিজ্ঞানীরা। আর এজন্যই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল বিশেষ করে জেযেরো গহ্বরে রোবট যানটি নিরাপদে অবতরণ করা।
এছাড়াও মঙ্গলগ্রহে নভোযান অবতরণের ১৪ টি প্রচেষ্টা আগে নেয়া হয়েছে, হলেও তা জানা। এছাড়াও এর মধ্যে সফল হয়েছে আটটি আর এর সবগুলোই ছিল আমেরিকান মিশন এর অন্তর্ভুক্ত। তবে ১৯৯৯ সালে একবার নাসার মঙ্গল মিশন ব্যর্থ হয়েছিল বলেও তারা জানান। এখন তাই বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় জেট প্রোপালসান গবেষণাগারে মিশন কেন্দ্রে অপেক্ষা করবেন প্রকৌশলীগন।